স্টাফ রিপোর্টার
সারাবিশ্বে করোনা প্রকোপে ইতিমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার পার করেছে বাংলাদেশ। এই করোনা প্রকোপের মাঝেই হঠাৎ করে নোটিশ আসে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছাত্রীদের জানুয়ারী-এপ্রিল সেশনের পরীক্ষা অনলাইনে দিতে হবে। নোটিশে জানানো হয় আগামী ১০ ই মে এর মধ্যে সেমিস্টার ফিস পরিশোধ করে আগামী ১৫ এবং ১৮ই মে তাদের অনলাইনে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে হবে।
নোটিশ দেয়ার সাথে সাথে ছাত্র ছাত্রীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে। তুলনামূলক কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থাকায় অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান এখানে পড়াশোনা করে যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা। অনলাইনে পরীক্ষার কথা শুনে যারা গ্রামে রয়েছে তাদের মাথায় হাত কারন মোবাইল নেটওয়ার্ক এর দূর্বলতা। পাশাপাশি তাদের পরিবারের অন্ন সংস্থানের চিন্তা তো রয়েছেই। এ অবস্থায় তারা খেয়ে বাচঁবে নাকি উচ্চ শিক্ষার সেমিস্টার ফিস দেবে এই প্রশ্নের ক্ষোভ এখন উগড়ে দিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এই অবস্থায় করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাতারকুল ক্যাম্পাসে অধ্যয়নরত ইংরেজী বিভাগের শেষ বর্ষের ৩৫ বি ব্যাচের সকল ছাত্র ছাত্রী সাথে সাথে এই অনলাইনের পরীক্ষাকে বয়কট করেছে।
৩৫ বি ব্যাচের পক্ষে ব্যাচের সি আর এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির এলিট ইংলিশ ক্লাবের ভি পি নাজমুল হোসেন আমাদের জানান, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে সব কিছু বন্ধ রয়েছে। যেখানে মানুষ স্বাভাবিক ভাবে আয় করতে পারছে না, অনেক মধ্যবিত্ত চিন্তায় আছে আগামীকাল তারা সংসারের জন্য বাজার কিভাবে করবে ঠিক এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিচ্ছে সেমিস্টারের টাকা জমা দিয়ে অনলাইনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে যা বর্তমান সময়ে অমানবিক।
তাই আমরা ইংরেজি বিভাগের ৩৫ বি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা এই করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইনের এই পরীক্ষায় অংশগ্রহন করব না। আমরা এই পরীক্ষাকে বয়কট করলাম। ৩৫ বি ব্যাচের পক্ষ থেকে সি আর নাজমুল হোসেন সহ শিক্ষার্থীদের মাঝে নাগিব নাজমুল, শরিফুল ইসলাম শাওন, আশিকুর রহমান, শহিদুজ্জামান শান্ত, জেনি গোমেজ, সাজিদ ইকবাল, আরিফুর রহমান রুবেল সহ সকল শিক্ষার্থী এই বয়কটের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
৩৫ বি ব্যাচের সি আর নাজমুল হোসেন আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ আপনারা বাস্তবতা বুঝে আশা করি ছাত্র ছাত্রীদের পাশে দাড়াবেন। আজ দেশে যেখানে মানুষের মৌলিক চাহিদা খাদ্য,.বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বাসস্থান যেখানে উপার্জন এর পথ বন্ধ হওয়ায় ইতিমধ্যেই প্রথম ৩ টা অনিশ্চিত সেখানে এই অনলাইনে পরীক্ষা নেয়াটা কি বাড়াবাড়ি নয়?
আমাদের প্রত্যাশা ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ এই করোনা মোকাবেলায় আমাদের পাশে থাকবেন এবং এই সিদ্ধান্তকে পুনঃ বিবেচনা করবেন । মানবতার জয় হবেই।